কলা খাওয়ার উপকারিতা পোষ্টে আপনাদের স্বাগত্বম। আপনি নিশ্চই কলার উপকারিতা জানতে এখানে এসেছেন। আজকের পোষ্টে সকালে ও রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা, কলার পুষ্টিগুন (Banana benefits) নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 
কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা এমন একটি ফল যাতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন। কলায় রয়েছে ৩ টি প্রাকৃতিক চিনি। যথা - 
  • সুক্রোজ।
  • ফ্রুক্টোজ।
  • গ্লুকোজ।
কলায় আরও রয়ে;ছে প্রচুর ফাইবার যা দেয় শরীরকে যোগান দেয় তাৎক্ষণিক শক্তি। ৯০ মিনিটের কষ্টসাধ্য ব্যায়ামের জন্য শক্তি যোগাতে দুটো কলাই যথেষ্ট। এজন্যই পৃথিবীর নামকরা এথলিটদের কাছে কলাই হলো ১ নম্বর ফল।

কলার উপকারিতা

কিন্তু কলা কি শুধু শক্তিই যোগায়? না। কলার আরও অনেক গুণাগুন আছে। জানতে বিস্তারিত পোষ্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

১। ডিপ্রেশান: কলায় থাকে ট্রিপটোফ্যান নামক প্রোটীন, যা শরীরে গিয়ে সেরোটোনিনে রূপান্তরিত হয়। সেরোটোনিন আপনার মনকে রিলাক্স করে, আপনার মুড ভাল করে তোলে, আপনাকে সুখীবোধ করতে সাহায্য করে।

প্রিমেন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোম(PMS) নারীদের জন্য: ভিটামিন বি৬ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যা আপনার মন মানসিকতাকে ভালো করতে সাহায্য করবে।

২। এনিমিয়া: কলায় থাকে প্রচুর আয়রন। রক্তে হিমোগ্লোবিন উতপাদনে কলা সাহায্য করে। যা এনিমিয়া রোগের জন্য অত্যন্ত সাহায্যকারী।

৩। রক্তচাপ: কলায় প্রচুর পটাশিয়াম থাকে এবং এতে লবণ কম থাকে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি খুবই ভাল কম্বিনেশান। বলা হয়ে থাকে, স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্যেও কলা উপকারী। 

৪। মস্তিষ্ক পটাশিয়ামের উপস্থিতি মস্তিষ্ককে দ্রুত শিখতে সাহায্য করে। স্মৃতিশক্তি ভাল করে তোলে।

৫। পায়খানা: কলায় প্রচুর ফাইবার থাকে। পাকা কলা খেলে পায়খানা নরম হয়। আবার কাচাকলা খেলে ডায়রিয়া’র সময় ভালো উপকার পাওয়া যায়।

৬। বুকজ্বলা: কলায় প্রাকৃতিক এন্টাসিড থাকে। আপনার যদি বুক জ্বলা শুরু হয় তাহলে একটি কলা খাবেন তাহলে আপনার বুকজ্বলা কমে যাবে। 

৭। মাথা গোলানো: সকাল ও দুপুরের মাঝে সকাল ১০ টায় ১ টা কলা খেতে পারেন। আপনার রক্তে সুগার লেভেল ঠিক রাখবে এবং মাথা গোলানো থেমে যাবে।

৮। মশার কামড়: মশার কামড়ে চামড়া ফুলে গেছে? বাজারের কোনো ক্রীম কেনার আগে পাকা কলার খোসা ডলে দেখুন। জ্বালাপোড়া কমে যাবে।

৯। উত্তেজনা/স্নায়ুচাপ: ভিটামিন বি আপনার স্নায়ুকে শান্ত করে তুলতে সাহায্য করে। পরীক্ষার আগে একটা কলা খান।

১০। অতিরিক্ত ওজন: অনেকে মন খারাপ থাকলে/কাজের অতিরিক্ত চাপ থাকলে নিজের অজান্তেই জাংক ফুড খেতে থাকেন। এরকম চাপে থাকলে আমাদের ব্লাড সুগার লেভেল ঠিক রাখা প্রয়োজন, যা প্রতি ২ ঘন্টায় একটি কলা খেলে ঠিক রাখা সম্ভব।

১১। আলসার: কলা আলসারের জন্য উপকারী। পাকস্থলির অম্লতা কমাতে সাহায্য করে।

১২। তাপমাত্রা: শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে একটি কলা খান। একঠি কলাই আপনার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক করে দিবে। 

১৩। সিজনাল এফেক্টিভ ডিসঅর্ডার: এই রোগের ভুক্তভোগীরা কলা খেতে পারেন। কারণ এতে আছে মুড এনহ্যান্সার প্রোটিন ট্রিপটোফ্যান।

১৪। ধূমপান: ভিটামিন বি৬, বি১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম শরীর হতে নিকোটিনের প্রভাব দূর করতে সাহায্য করে। সুতরাং, ধূমপান ছেড়ে দেবার জন্য কলা’র জুড়ি নেই।

১৫। স্ট্রোক: গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিদিনকার খাদ্যাভাসে কলা রাখলে ৪০% স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়!

১৬। স্ট্রেস: পটাশিয়াম আপনার হার্টবিট ঠিক রাখে। অক্সিজেন মস্তিষ্কে নিয়মিত পৌঁছে দেয়, শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখে। কলায় যা প্রচুর আছে।

১৭। আঁচিল: প্রাকৃতিক ভাবে আচিল হতে মুক্তি পাওয়ার এটা একটি প্রাচীন উপায়। একটি পাকাকলা নিন। আপনার আচিলের ওপর উপুড় করে স্থাপন করুন। এবার তার ওপরে সার্জিক্যাল টেপ পেচিয়ে রাখুন।

দেশি কলা ও সাগর কলা আমাদের দেশে সহজেই পাওয়া যায়। আপেলের সাথে কলার তুলনা করলে বলতে হয়, এতে আপেলের চাইতে দ্বিগুণ কার্বোহাইড্রেট আছে, তিনগুন ফসফরাস আছে, পাঁচগুণ ভিটামিন এ ও আয়রন আছে, দ্বিগুণ পরিমাণে অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ আছে। আর আছে পটাশিয়াম, যা একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। প্রতিদিন খাদ্যাভাসে কলা রাখুন। আপনার শিশুকেও এই অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করুন।


আশা করি, কলা খাওয়ার উপকারিতা পোষ্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এই পোষ্ট থেকে কলার গুনাগুন ও উপকারিতা জানতে পেরেছেন। 
নবীনতর পূর্বতন